আজকের খেলা ডেস্ক:
করোনাভাইরাসে কারণে বন্ধ রয়েছে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক খেলাধুলা। এ অবস্থায় বিপাকে পড়ছেন অনেক খেলোয়াড়। এ সময় সাহায্যের হাত বাড়িয়েছে বিশ্ব আর্চারি ফেডারেশন। সারা বিশ্বের বাছাইকরা ৩৫ জন তিরন্দাজকে ১ লাখ ৯০ হাজার ইউএস ডলার অনুদান দেবে সংস্থাটি। এই তহবিল থেকে বাংলাদেশের আর্চার রোমান সানা পাচ্ছেন ৫০০০ ইউএস ডলার।
করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্বের সব দেশের আর্চারি ফেডারেশনই ক্ষতিগ্রস্ত। এখনো আন্তর্জাতিক আর্চারি চ্যাম্পিয়নশিপ চালুর অনুমতি দেয়নি বিশ্ব আর্চারির সর্বোচ্চ সংস্থা। কবে নাগাদ আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট মাঠে গড়াবে, সেটাও বলা যাচ্ছে না। খেলা না থাকায় ফেডারেশনগুলো আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে, আর্থিক সমস্যায় পড়েছেন অনেক আর্চারও। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের আর্চারি ফেডারেশনের দিকে তাই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে বিশ্ব আর্চারি ফেডারেশন ও ফাউন্ডেশন ফর গ্লোবাল স্পোর্টস ডেভলপমেন্ট।
করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত আর্চারদের জন্য একটা ত্রাণ তহবিল গঠন করেছে এ দুটি সংস্থা, ১ লাখ ৯০ হাজার ইউএস ডলার (প্রায় ১ কোটি ৬১ লাখ টাকা) জমা হয়েছে সেই তহবিলে । সেখান থেকে বাংলাদেশের তিরন্দাজ রোমান সানা পাচ্ছেন ৫০০০ ইউএস ডলার (প্রায় ৪ লাখ ২৩ হাজার টাকা)।
বাংলাদেশ আর্চারি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক কাজী রাজীব উদ্দীন বলেছেন, ‘আমরা রোমান সানার জন্য কিছু দিন আগে বিশ্ব আর্চারি সংস্থায় একটা অনুদানের আবেদন করেছিলাম। ওরা সব কিছু যাচাই–বাছাই করে এই অনুদান দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। টাকা পাওয়ার বিষয়টা প্রক্রিয়াধীন আছে। আশা করছি, খুব দ্রুত রোমানের ব্যাংক একাউন্টে টাকা জমা হয়ে যাবে।’
দেশের আর্চারির পোস্টারবয় রোমানকে এই অনুদান পাইয়ে দিতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছেন জাতীয় দলের জার্মান কোচ মার্টিন ফ্রেডরিখ। তিনি বলছিলেন, ‘এই অনুদান পেতে আমাকে অনেক কাগজপত্র পাঠাতে হয়েছে বিশ্ব আর্চারি সংস্থায়। শেষ পর্যন্ত ও এই টাকা পাচ্ছে বলে আমি খুব খুশি। তবে এই টাকাটা শুধু ওর পরিবারের জন্যই নয় , নিজের পারফরম্যান্সের উন্নতির জন্যও খরচ করতে হবে।’
সারা বিশ্ব থেকে ১২২ জন তিরন্দাজ এই অনুদান পেতে আবেদন করেন। এর মধ্য থেকে বিশ্ব আর্চারি সংস্থার বাছাই কমিটি বেছে নেয় ৩৫ জন তিরন্দাজকে। কমিটি এই ৩৫ জন তিরন্দাজের পরিবারের আর্থিক অবস্থা, গত দুই বছরের আন্তর্জাতিক পারফরম্যান্সও আমলে নিয়েছে। পাশাপাশি এই অনুদান তিরন্দাজেরা কীভাবে খরচ করবেন, সেটার একটা পরিকল্পনাও বিশ্ব আর্চারি সংস্থাকে জানাতে হয়েছে।
গত দুই বছর যেন সোনায় মোড়ানো ছিল রোমানের। গত বছর হল্যান্ডে বিশ্ব আর্চারি চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশের প্রথম ব্রোঞ্জ পদক এনে দেন খুলনার এই তরুণ। সরাসরি টোকিও অলিম্পিকে খেলার সুযোগ করে নেন রোমান। ফিলিপাইনে এশিয়া কাপে জেতেন সোনা। আর বছরের শেষে নেপালে এসএ গেমসে ব্যক্তিগত ও দলগত মিলিয়ে রিকার্ভ ইভেন্টে জেতেন তিনটি সোনার পদক।
অনুদান পাওয়ার খবরটা শুনে বেশ উচ্ছ্বসিত রোমান, ‘আমি কোচের মাধ্যমে এই অনুদানের জন্য আবেদন করেছিলাম। শুনে খুব ভালো লাগছে। তবে আমি এখনো নিশ্চিত নই কত টাকা পাব। বর্তমান পরিস্থিতিতে এই টাকাটা আমার অনেক উপকারে আসবে। আমার অসুস্থ মায়ের ওষুধ কিনতেই প্রতি মাসে খরচ হচ্ছে ৫ হাজার টাকা।’